করোনা মহামারীতে মানুষকে বাঁচাতে বা সচেতনতা করতে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার সকালে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলী এলাকায় ও শ্রীনগরের বীরতারা ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণের সময় তিনি এসব কথা বলেন। ত্রাণ বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সিরাজদিখান থানা বিএনপির সভাপতি বীরেন কুদ্দুস, সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সোহেল হোসেন, শ্রীনগর বিএনপির সভাপতি শহীদুল হক, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম কানন, সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জলসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহাদুর্যোগ ২১০টি দেশে আঘাত হেনেছে। এটির কোনো ওষুধ তৈরি হয়নি। সচেতনতা ও সাবধানতা থাকতে হবে করোনা মোকাবেলায়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো লকডাউন খুলে দিয়েছে। একবার বলেন লকডাউন শিথিল করা হয়েছে আবার বলেন লকডাউন চলবে। তারা মানুষকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলছেন। আমাদের দেশে আক্রান্ত হওয়ার আগে করোনা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে পারতেন তা নেয়নি।
তিনি বলেন, সরকার কয়েকটি ফ্লাইওভার তৈরি করে উন্নয়নে ভাসিয়ে দিচ্ছেন বলে প্রচার করছে। হাসপাতাল নেই কেনো, ভেন্টিলেটর নেই কেনো। করোনা রোগীদের দরকার ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন। দেশের ৯০% হাসপাতালে এ ব্যবস্থা নেই। তাহলে মানুষ বাঁচবে না মরবে। তাহলে তো মানুষ মরার কথা। সরকার মানুষ বাঁচানোর কোনো কাজ করেনি।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, মানুষ বাঁচানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেননি। আপনি করেছেন উন্নয়নের নামে আপনার নেতাকর্মীদের যাতে পকেট ভারী হয়। আপনার দলের নেতাকর্মীরা ক্যাসিনোর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। হাসপাতাল করেননি। মানুষ বাঁচানোর জন্য উন্নত যন্ত্রপাতি আনেননি। উন্নত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় করেননি। যার মধ্য দিয়ে প্রকৃত উন্নয়ন হবে তা আপনারা করেননি। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করে মানুষ বাঁচুক মরুক তাতে সরকারের কোনো দায়িত্ব নেই। আমি ছেড়ে দিলাম মরবো মরূক। আর যে বাঁচবে বাঁচুক। আমি তো ঠিক আছি। আমার নেতাকর্মীরা খেয়েদেয়ে ঠিক আছে। আমাদের জীবন নিরাপদ আছে। জনগণের সাথে কোনো সম্পর্ক নাই। সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মারা যাচ্ছে। সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই।
রিজভী বলেন, এরকম দুর্যোগ পরিস্থিতিতে আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী জনগণের পাশে আছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করতে পারছিনা। আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হচ্ছে। মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অর্থাৎ জনগনকে সহায়তা করার জন্য বিরোধী দলগুলো এগিয়ে যাবে সেখানে তারা বাধা দিচ্ছে। অসহায় মানুষ, কর্মহীন মানুষ, গরিব মানুষরা বেঁচে থাকুক সরকার তা চায়না। চায়না বলে ভয়ংকর মহামারীতে ও নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
সরকার করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি সবাই মিলে কারণ ও প্রতিরোধ করি। সরকার সেদিকে নজর দেয়নি। গরিব মানুষকে সহায়তা করতে যাতে না হয় সে জন্য মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। সরকারি ত্রাণ আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান মেম্বার চুরি করছে। গরীব অসহায় মানুষকে ৩-৪মাস খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে পারত। সেটা না করে লকডাউন খুলে দিয়েছে। ফলে প্রতিদিনই আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।